অথচ একটা সময় বাংলাদেশের জন্য চিন্তা ছিল দলীয় সর্বনিম্ন রানের লজ্জা এড়ানো। ২৬ রানে ৬ উইকেট পতনের পর বাংলাদেশ দলীয় শতরান পূরণ করবে সেটার পক্ষে বাজি ধরার লোকও ছিল কম

মিরাজ-লিটন বীরত্বে ২৬২ রানে থামল বাংলাদেশ 

অথচ একটা সময় বাংলাদেশের জন্য চিন্তা ছিল দলীয় সর্বনিম্ন রানের লজ্জা এড়ানো। ২৬ রানে ৬ উইকেট পতনের পর বাংলাদেশ দলীয় শতরান পূরণ করবে সেটার পক্ষে বাজি ধরার লোকও ছিল কম। কিন্তু লিটন দাসের শতরান, মেহেদী হাসান মিরাজের ৭৮ আর হাসান মাহমুদের ধৈর্যশীল ব্যাটিং বাংলাদেশের স্কোর পার করায় ২৫০। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেমেছে ২৬২ রানে। পাকিস্তানের চেয়ে প্রথম ইনিংসে পিছিয়ে আছে ১২ রানে। 

শুরুটা বাংলাদেশের জন্য ছিল একেবারেই ভুলে যাওয়ার মতোই। আগের দিন দুই ওভার দেখেশুনে পার করলেও এদিন নতুন বলে বাংলাদেশ ছিল ছন্নছাড়া। জাকির হোসেনকে দিয়ে শুরু। এরপর আরেক ওপেনার সাদমান ইসলামও ফিরেছেন স্ট্যাম্প হারিয়ে। অধিনায়ক শান্তও হয়েছেন ব্যর্থ। খুররাম শেহজাদের দুর্দান্ত স্পেলে টাইগার ব্যাটিং লাইনআপ দিশেহারা। 
চার নম্বরে নামা মুমিনুল হক কিছু বুঝে ওঠার আগেই ক্যাচ দিয়েছেন মির হামজার বলে। ফুল লেংথে ফেলা সেই ডেলিভারিতে ফ্লিক শট খেলতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশের সাবেক টেস্ট অধিনায়ক। কিন্তু মিড অনে সেটি ধরা পড়েছে মোহাম্মদ আলির হাতে। মুমিনুল ফিরলেন মাত্র ১ রানে। এ নিয়ে ১৪-২০ রানের ভেতরই ৪ উইকেট হারিয়েছে সফরকারীরা।

মির হামজার করা ব্যাক অব লেংথের বলে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দেন মুশফিক। সাকিব আল হাসান এদিন আবারও ব্যাট হাতে দেখলেন ব্যর্থতা। ১০ বলে ২ রান করে সাকিব আউট হয়েছেন খুররমের বলে। খুররম নিয়েছেন ৪ উইকেট, মীর হামজা নিয়েছেন ২ উইকেট।

২৬ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর লিটন কুমার দাস এবং মেহেদি হাসান মিরাজের পার্টনারশিপ বাংলাদেশকে সর্বনিম্ন রানে অলআউটের লজ্জা থেকে মুক্তি দিয়েছে। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। মিরাজের চারে সেই মার্ক পেরিয়ে যায় টাইগাররা। 
ফলো-অন এড়াতে দরকার ছিল ১২৫ রান। লিটনের চারে সপ্তম উইকেটে শতরানের জুটির পর সেই ফলো-অন এড়ানোর মিশনটাও পূর্ণ করে ফেলে বাংলাদেশ। এর খানিক পরেই দুই ব্যাটার পেয়ে যান ফিফটি। গড়েন বিশ্বরেকর্ড। 
মিরাজ ১২৪ বলে ৭৮ রান করে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে সপ্তম উইকেটে দুজনের গড়া ১৬৫ রানের সেই জুটি। ততক্ষণে অবশ্য একটি বিশ্ব রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন লিটন-মিরাজ। ১৪৭ বছরের টেস্ট ইতিহাসে ৫০ রানের কমে ষষ্ঠ উইকেট পতনের পর সপ্তম উইকেটে সবচেয়ে বড় জুটি এটা।
এর আগে ৫০ রানের কমে ৬ উইকেট হারানোর পর সপ্তম উইকেটে সর্বোচ্চ জুটিটা ছিল ১১৫ রানের। ২০০৬ সালে করাচিতে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৩৯ রানে প্রথম ৬ উইকেট হারায় পাকিস্তান। এরপর সপ্তম উইকেটে ১১৫ রানের জুটি গড়েন আবদুল রাজ্জাক ও কামরান আকমল।

মেহেদী হাসান মিরাজ আউট হওয়ার পর থেকে কিছুটা ধীরগতিতে খেলছিলেন লিটন দাস। ডানহাতি এই ব্যাটার নিজেও জানতেন তিনিই শেষ স্বীকৃত ব্যাটার। তাসকিন আহমেদ ভরসার পাত্র হলেও আজ ছিলেন ব্যর্থ। লিটন খুব একটা ঝুঁকি নেননি। রয়েসয়ে খেলেছেন, ক্র্যাম্পেও ভুগেছেন। কিন্তু সেখান থেকে উঠে ঠিকই গিয়েছেন ৯৯ পর্যন্ত। এরপর আবার খানিক স্থবিরতা। শেষ পর্যন্ত চার মেরে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করলেন। ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি। ১৭১ বল খেলে পেলেন সেঞ্চুরির দেখা। 

২৬ রানে ৬ উইকেট পতনের পর থেকে লিটন বাংলাদেশকে টেনে নিয়ে গেলেন ২৬২ পর্যন্ত। উড়িয়ে খেলতে চেয়েছিলেন। বাউন্ডারি লাইনে সাইম আইয়ুব নিয়েছেন ক্যাচ। সালমান আঘার বলে যখন লিটন আউট হয়েছেন তখন তার নামের পাশে ১৩৮ রান। নাহিদ রানা অবশ্য এরপর কিছু করতে পারেননি। একইওভারে ফিরেছেন তিনি। বাংলাদেশ থামল ২৬২ রানে। 

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours