১০ জেলা বন্যায় প্লাবিত: আরও অবনতির শঙ্কা

দেশের ১০ টি জেলা ২৪ টি উপজেলা প্লাবিত। পানিবন্দী প্রায় ৮০ লাখ মানুষ। ইতিমধ্যে বন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ কাজের জন্য নগদ ১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ১৫ হাজার ৯০০ মে. টন চাল ও ১৫ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।ফেনী ও নোয়াখালিতে উদ্ধার কাজে নেমেছে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী।

প্লাবিত জেলা

১. ফেনী, ২. নোয়াখালী, ৩. খাগড়াছড়ি, ৪. কুমিল্লা, ৫. মৌলভীবাজার, ৬. হবিগঞ্জ, ৭. সিলেট, ৮. ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ৯. সুনামগঞ্জ, ১০. চট্টগ্রাম

ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়ায়সহ চারটি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে । প্রায় দুই শতাধিক গ্রামে ১৫ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়েছে।  এর আগে সর্বশেষ ১৯৮৮ সালে ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন ফেনীর বাসিন্দারা। গত ৩৬ বছরে অনেকবার বন্যা হলেও এ ধরনের ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়নি। এবারের বন্যায় পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়ার ৯০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যার কারণে ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কসহ স্থানীয় সব গ্রামীণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে

নোয়াখালী জেলার নয়টি উপজেলার মধ্যে আটটিতেই জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। তিন দিন ধরে বেশির ভাগ ঘরবাড়ি জলমগ্ন হয়ে আছে। টানা বৃষ্টি এবং মুহুরী ও ফেনী নদীর পানিতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ২২ লাখ মানুষ। এর মধ্যে ৩৪৫ আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে ২০ হাজার মানুষ। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আরও খারাপ অবস্থা হতে পারে নোয়াখালীর।

খাগড়াছড়ি সদর ও পানছড়ি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও আরও অবনতি হয়েছে দীঘিনালা উপজেলায়। দীঘিনালায় এখনো হাজারো মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় আছেন। দীঘিনালার সঙ্গে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা ও লংগদু উপজেলার সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের সব কটিই বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন উপজেলার প্রায় এক লাখ মানুষ। ঘরবাড়ি, ফসলি জমি প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি পাহাড়ি ঢলে ভাঙন দেখা দিয়েছে ধুরং নদের বেড়িবাঁধের কয়েকটি স্থানে

কুমিল্লার গোমতী নদীতে পানি বেড়ে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত মঙ্গলবার রাত থেকে বৃষ্টি ও ঢলের পানি ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। গোমতী নদীর আদর্শ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, গোমতীর তীর ঘেঁষে আছড়ে পড়ছে ঢেউ। চরাঞ্চলের কয়েক হাজার একর সবজিখেত পানিতে তলিয়ে গেছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর ও আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্ট প্লাবিত হয়েছে। আজ সকাল ১০টার পর ইমিগ্রেশনের সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। পানির তোড়ে গাজীর বাজার এলাকায় একটি অস্থায়ী সেতু ভেঙে আখাউড়া-আগরতলা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। উপজেলার অন্তত ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে

মৌলভীবাজারে মনু নদের পানি বিপৎসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্য প্রধান তিন নদ-নদী ধলাই, জুড়ী ও কুশিয়ারার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুলাউড়া ও জুড়ী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নদ-নদীর বাঁধ ভেঙে, উপচে ৬২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

সিলেটের কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আশেপাশের এলাকা প্লাবিত করেছে। হবিগঞ্জের খোয়াই নদীর পানি চুনারুঘাট ও আশেপাশের এলাকায় প্লাবিত করেছে। সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে পানি বৃদ্ধি পেয়ে আশেপাশের এলাকা প্লাবিত করেছে। এর প্রভাব পড়ছে কিশোরগঞ্জেও।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস: 

আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর- পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার প্রধান নদীসমূহের পানি কতিপয় পয়েন্টে সময় বিশেষে বৃদ্ধি পেতে পারে।’

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours