মালয়েশিয়ার বিখ্যাত একটি ইসলামিক সংস্থার পরিচালিত দাতব্য প্রতিষ্ঠানে যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া ৪০০ শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে।

মালয়েশিয়ায় চ্যারিটি হোমে যৌন নিপীড়ন, ৪০০ শিশু উদ্ধার

মালয়েশিয়ার বিখ্যাত একটি ইসলামিক সংস্থার পরিচালিত দাতব্য প্রতিষ্ঠানে যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া ৪০০ শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার ওই শিশুদের উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়ে দেশটির পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রতিষ্ঠানটিতে শিশুরা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
দেশটির পুলিশের মহাপরিদর্শক রাজারুদিন হোসেন বলেছেন, দুটি রাজ্যের ২০টি চ্যারিটি হোমে একযোগে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় পুলিশ দাতব্য প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত ওস্তাদ বা ইসলামিক শিক্ষকসহ ১৭১ জন প্রাপ্তবয়স্ককে গ্রেপ্তার করেছে।

রাজধানী কুয়ালালামপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের এই মহাপরিদর্শক বলেছেন, চলতি মাসে ওই দাতব্য প্রতিষ্ঠানে আশ্রিত শিশুরা অবহেলা, নির্যাতন, যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এই অভিযোগের পর সেখানে অভিযান চালিয়ে ২০১ জন ছেলে ও ২০১ জন মেয়ে শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃতদের প্রত্যেকের বয়স এক থেকে ১৭ বছরের মধ্যে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে এই অভিযোগ কারা করেছেন, সেই বিষয়ে তিনি কিছু জানাননি। 

রাজারুদিন হোসেন বলেছেন, দাতব্য প্রতিষ্ঠানটি মালয়েশিয়ার গ্লোবাল ইখওয়ান সার্ভিসেস অ্যান্ড বিজনেস (জিআইএসবি) নামের একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতো। বুধবার গভীর রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেওয়া শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়নের অভিযোগ অস্বীকার করেছে জিআইএসবি। একই সঙ্গে যেসব চ্যারিটি হোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলো তারা পরিচালনা করে না বলে দাবি করেছে।

জিআইএসবি বলেছে, ইসলামিক ও জাতীয় আইনের পরিপন্থী কর্মের পরিকল্পনা এবং পরিচালনা করা আমাদের নীতির মধ্যে নেই। তবে এই ঘটনায় পুলিশের কাছে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছে। একই সঙ্গে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, মিসর, সৌদি আরব, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া এবং থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জিআইএসবির ব্যবসা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি সুপারমার্কেট থেকে শুরু করে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক পণ্যের ব্যবসায় জড়িত বলে নিজেদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে।

রাজারুদিন বলেন, পুলিশ উদ্ধারকৃত অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুরা জিআইএসবি মালয়েশিয়া শাখার কর্মীদের সন্তান বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে। এই শিশুদের জন্মের পরপরই জিআইএসবির চ্যারিটি হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে একাধিক শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে সম্প্রতি অভিযোগ ওঠে। এরপরই জিআইএসবির ২০টি চ্যারিটি হোমে অভিযান চালিয়ে ৪০২ জন শিশুকে উদ্ধার করেছে মালয়েশিয়া পুলিশ।

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours