টানা বর্ষণ ও উজানে ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে ফেনী। জেলার ফুলগাজী-পরশুরাম-ছাগলনাইয়া উপজেলায় দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ফেনী ছাড়াও বন্যার কবলে পড়েছে কুমিল্লা, নোয়াখালি, খাগড়াছড়ি, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলা।
ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রধান সড়ক ৪ থেকে ৭ ফুট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জেলা সদরের সঙ্গে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার সড়ক যোগাযোগ। বন্যা পরিস্থিতিতে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বিদ্যুৎ সংযোগ। এতে ভোগান্তি আরও বেড়েছে মানুষের।
বন্যার এই ভয়াবহতা দেখা দিয়েছে পাশ্ববর্তী জেলা কুমিল্লা ও নোয়াখালিতে। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়াতে ভাঙন দেখা দিয়েছে নদীগুলোতে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে উপজেলায় প্রায় ৫০ হাজারের অধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এতে করে সুপেয় পানির সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া রাতভর বৃষ্টিতে উপজেলার অধিকাংশ মাছের প্রজেক্ট, দীঘি ও পুকুর ভেসে গিয়ে কোটি কোটি টাকার মাছ চলে গেছে।
এদিকে নোয়াখালিতে মেঘনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে লোকালয় প্লাবিত করেছে। জেলার ৯টি উপজেলার সবকটিতেই বসতঘর, গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়ছে কয়েক লক্ষ মানুষ।
মৌলভীবাজার, রাজনগর, কুলাউড়া, কমলগঞ্জ ও বড়লেখা: জেলার কুশিয়ারা, মনু, ধলাই ও জুড়ী নদে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। মনু নদী বিপতসীমার ৫৫ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুলাউড়া উপজেলায় মনুর বাধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়েছে ১২ টি গ্রাম। নদী ভাঙনের খবর পাওয়া গেছে জেলার রাজনগর উপজেলাতেও। পানি বাড়ার সাথে সাথে এছাড়া ঝুকির মদ্যে পড়েছে মৌলভীবার শহরও। এখন পর্যন্ত এই জেলায় প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
পানিতে তলিয়ে গেছে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নের কমপক্ষে ২০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল ও রাস্তাঘাট। খোয়াই নদীর পানি বাল্লা পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া খোয়াই ও করাঙ্গী নদীর পানি উপচে বন্যা প্লাবিত হয়েছে অনেক গ্রাম।
+ There are no comments
Add yours