ক্রমবর্ধমান দেশীয় স্টার্টআপ এর ইতিবাচক গল্পগুলোকে প্রকাশ করার মাধ্যমে তরুণদের স্টার্টআপ বিজনেস মডেলের জন্য উদ্ভুদ্ধ করতে মিডিয়ার গুরুত্ব অপরসীম। আমাদের উদ্যোক্তারা নতুন প্রযুক্তিনির্ভর অনেক সমাধান নিয়ে আসছেন, যা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা করার সক্ষমতা রাখে। তাই বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশীয় স্টার্টআপের বিকাশে এবং টেকসই স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে গণমাধ্যমকে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে’
শনিবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে ‘বাংলাদেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম শক্তিশালীকরণে গণমাধ্যমের অংশিদারিত্ব’ শীর্ষক এক প্যানেল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (বিএইচটিপিএ) আয়োজিত এই সেমিনারে স্টার্টআপ ও গণমাধ্যমের পারস্পরিক সহযোগিতার গুরুত্ব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সরকার ডিজিটাল উদ্যোক্তাদের জন্য বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করছে এবং মিডিয়া এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। বিএইচটিপিএ-এর ডিজিটাল এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ অ্যান্ড ইনোভেশন ইকোসিস্টেম ডেভেলপমেন্ট (ডিইআইইডি) প্রকল্প দেশের উদ্যোক্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ, বিনিয়োগ সহায়তা এবং নেটওয়ার্কিং সুবিধা প্রদান করছে। এই প্রকল্পের অধীনে সারা দেশের ১ হাজার ৫০ জন উদ্যোক্তাকে বিভিন্ন পর্যায়ের প্রশিক্ষণ ও মেন্টরিং প্রদান করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে সেন্টার ফর টেকনোলজি জার্নালিজমের (সিটিজে) সভাপতি হাসান জাকির বলেন, বাংলাদেশের স্টার্টআপ কার্যক্রম ১২ বছরের বেশি সময় ধরে চললেও এখনো যথাযথ ইকোসিস্টেম তৈরি হয়নি। বৈশ্বিক র্যাঙ্কিংয়ে আমাদের অবস্থান উন্নত করতে স্টার্টআপ এবং মিডিয়াকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে।
স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের জন্য মিডিয়া তিনটি মূল ক্ষেত্রে কাজ করতে পারে বলে বক্তারা উল্লেখ করেন। এ তিনটি বিষয় হলো সফলতা ও ব্যর্থতার গল্প তুলে ধরা। উদ্যোক্তাদের সাফল্যগাথা যেমন প্রচারিত হওয়া উচিত, তেমনি ব্যর্থতার কারণ বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যৎ উদ্যোক্তাদের জন্য শিক্ষামূলক কনটেন্ট তৈরি করা যেতে পারে।
“বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা—দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা মূলত মিডিয়ার মাধ্যমেই নতুন স্টার্টআপ সম্পর্কে জানতে পারেন। সচেতনতা ও নীতিনির্ধারণে সহায়তা—গণমাধ্যম স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে, যা দীর্ঘ মেয়াদে নীতিগত উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।”
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র প্রাইভেট সেক্টর স্পেশালিস্ট হোসনে ফেরদৌস সুমী বলেন, বাংলাদেশি স্টার্টআপ ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। দেশীয় স্টার্টআপদের বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরতে মিডিয়ার সহযোগিতা প্রয়োজন।

ফিউচার স্টার্টআপের প্রতিষ্ঠাতা রুহুল কাদের ও ওয়াই ওয়াই ভেঞ্চার এর প্রোগ্রাম সমন্বয়ক ফারহিয়া তাবাসসুম হক, এক্সালেরাটিং বাংলাদেশ এর ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ আরিফুর রহমানসহ স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম এক্সপার্টরা আলোচনায় অংশ নেন। তাদের বক্তব্য থেকে উঠে আসে, ‘মিডিয়ার মাধ্যমে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের উন্নয়ন হলে নতুন উদ্যোক্তারা অনুপ্রাণিত হবেন এবং দেশীয় স্টার্টআপগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের তুলে ধরার সুযোগ পাবে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডিজিটাল এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ অ্যান্ড ইনোভেশন ইকোসিস্টেম ডেভেলপমেন্ট (ডিইআইইডি) এর প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার।
আলোচনা শেষে ডিজিটাল এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ অ্যান্ড ইনোভেশন ইকোসিস্টেম ডেভেলপমেন্ট (ডিইআইইডি) প্রকল্প এর স্টার্টআপ অ্যান্ড স্কেলআপ প্রোগ্রামের প্রথম ধাপে নির্বাচিত স্টার্টআপের প্রতিষ্ঠাতা ও সহ-প্রতিষ্ঠাতাদের উপস্থিতিতে একটি ইফতার পার্টি ও নেটওয়ার্কিং অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
+ There are no comments
Add yours